লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প বিষয়ক একটি বিস্তারিত বিবরণ
ভূমিকা
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি সামাজিক কল্যাণমূলক উদ্যোগ যা মহিলাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করার জন্যে চালু করা হয়েছে। বিশেষ করে গরিব ও মধ্যবিত্ত মহিলাদের আর্থিক সুরক্ষা প্রদান করতে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে। প্রকল্পটি ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলাদের মাসিক অর্থ সহায়তা প্রদান করে। লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের মাধ্যমে যারা সরকারি চাকরির বাইরে রয়েছেন তারা সরাসরি উপকৃত হবেনএই প্রকল্পের লক্ষ্য সমাজের দুর্বল শ্রেণির মহিলাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, এই ধরনের একটি প্রকল্প শুধুমাত্র আর্থিক সহায়তা প্রদান করছে না, এটি সমাজের প্রতি নারীদের অবদানকেও সম্মান জানাচ্ছে ।
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সুবিধাভোগী কারা?
এই প্রকল্পের প্রধান সুবিধাভোগী হলেন ২৫ থেকে ৬০ বছর বয়সী মহিলারা। তবে এখানে কিছু নির্দিষ্ট শর্তাবলী রয়েছে যা পূরণ করলে তবেই তারা এই সুবিধা পেতে পারবেন।
উদাহরণস্বরূপ
1. সরকারি চাকরিজীবী নন :- কোনো মহিলাই যদি সরকারি চাকরি করেন বা সরকারি কোনো সংস্থায় চাকরি করেন, তবে তিনি এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হবেন না।
2. আয়কর প্রদানকারী নন:-যেসব মহিলারা আয়কর প্রদান করেন, তারাও এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন।
3. সামাজিক ও আর্থিক অসুবিধা:- যেসব মহিলারা সমাজের নিম্নবিত্ত শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে রয়েছেন, তারা এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেন।
এই প্রকল্পের আওতায় দু’ধরনের সহায়তা প্রদান করা হয়:
সাধারণ ক্যাটাগরি মহিলাদের জন্য মাসিক ₹12০০ প্রদান করা হয়।
তফসিলি জাতি/তফসিলি উপজাতি মহিলাদের জন্য মাসিক ₹1০০০ প্রদান করা হয়।
Read More :- National Means Cum Merit Scholarship 2024-25
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য প্রয়োজনীয় নথি
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পে আবেদন করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট নথির প্রয়োজন হয়। এসব নথি জমা দেওয়ার পরই আবেদন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে এবং মহিলারা আর্থিক সহায়তা পেতে শুরু করবেন। প্রয়োজনীয় নথিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো
1. স্বাস্থ্যসাথী কার্ড:- এই কার্ডের ফটোকপি অবশ্যই জমা দিতে হবে।
2.আধার কার্ড:-আবেদনকারীর নাম, ঠিকানা এবং অন্যান্য বিবরণ যাচাই করার জন্য আধার কার্ডের ফটোকপি প্রয়োজন।
3. ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণ:- আবেদনকারী যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ সহায়তা পেতে চান, সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্টের ডিটেইলস এবং প্রথম পাতার ফটোকপি জমা দিতে হবে। এই ডিটেইলসের মধ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর, IFSC কোড এবং MICR কোড অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে।
4. পাসপোর্ট সাইজ ছবি:- আবেদনকারীর তোলা পাসপোর্ট সাইজ ছবি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে।
5. স্বাক্ষর করা ঘোষণাপত্র:-আবেদনকারীকে স্বাক্ষর করে একটি ঘোষণাপত্র জমা দিতে হবে যেখানে তিনি এই মর্মে ঘোষণা করবেন যে, তিনি কোনও সরকারি চাকরিজীবী নন এবং তার বার্ষিক আয় নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে।
এই সকল নথি সঠিকভাবে জমা দেওয়ার পরই আবেদনটি গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে এবং প্রক্রিয়া শুরু হবে।
লক্ষ্মীর ভান্ডার হেল্প ডেস্কের কর্মপদ্ধতি
লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের সাথে সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য ও সহায়তার জন্য একটি হেল্প ডেস্ক বা সাহায্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এই হেল্প ডেস্কটি বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী দ্বারা পরিচালিত হয়, যারা আবেদনকারীদের বিভিন্ন ধরণের সহায়তা প্রদান করে। হেল্প ডেস্কের কর্মপদ্ধতি ও তাদের দায়িত্বের তালিকা নিম্নরূপ:
1. তথ্য সরবরাহ- যারা প্রকল্প সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাদের জন্য প্রকল্পের উদ্দেশ্য, যোগ্যতা, প্রয়োজনীয় নথি এবং অন্যান্য তথ্য সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও, আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানানো হয় যাতে তারা সঠিকভাবে আবেদন করতে পারেন।
2. আবেদনপত্র প্রদান:- হেল্প ডেস্কের অন্যতম দায়িত্ব হল আবেদনকারীদের ফর্ম সরবরাহ করা। যদি কেউ প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক হন, তাদের জন্য আবেদনপত্র পূরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয় এবং ফর্মটি সঠিকভাবে পূরণ করতে সাহায্য করা হয়।
3. নথি যাচাই ও গ্রহণ:-আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় আবেদনকারীর সকল নথি যাচাই করা হয়। সকল প্রয়োজনীয় নথি যেমন স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ডিটেইলস ইত্যাদি যাচাই করা এবং সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হয়।
4. Acknowledgement প্রদান:- আবেদনপত্র গ্রহণ করার পর, আবেদনকারীকে একটি acknowledgment প্রদান করা হয়। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া যা প্রমাণ করে যে, আবেদনটি জমা দেওয়া হয়েছে এবং প্রক্রিয়াকরণে রয়েছে।
5. আবেদনপত্র আপলোড:- সমস্ত নথি যাচাই করার পর, আবেদনপত্রটি লক্ষ্মীর ভান্ডার পোর্টালে আপলোড করা হয়। এটি একটি ডিজিটাল পদ্ধতি যার মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়াকরণ আরও দ্রুত হয় এবং সকল তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
0 Comments